December 26, 2024, 7:17 pm
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, আজকে আধুনিক বিশ্বে একটি দেশের সরকার যত শক্তিশালী হোক সেটাকে কিন্তু মিডিয়া ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে পারে। এটার জন্য বন্দুকের দরকার হয় না।
রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে শুক্রবার বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) দ্বিবার্ষিক কাউন্সিলের উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক তথ্যমন্ত্রী আবদুল মঈন খান সংবামাধ্যমের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, সংবাদপত্রকে ফোর্থ স্টেট বলা হয়। বিলেতে দি কিং, দি চার্চ অ্যান্ড দি পিপল, তারপরে তাদের যে জবাবদিহি জনগণের কাছে রাজার এবং তখনকার দিনে চার্চ একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান ছিল, তাদের যে জবাবদিহি সেটা নিশ্চিত করার জন্য এসেছিল সংবাদপত্র।
এই কারণে আধুনিক বিশ্বে সংবাদপত্রের গুরুত্ব এত বেশি। সংবাদপত্র বলুন, পরবর্তিতে টিভির কথা বলুন, আজকে সোশাল মিডিয়ার কথাই বলুন, যা কিছু বলুন না কেন, তাদের একটি গুরু দায়িত্ব, সেটা হল যারা দেশ পরিচালনা করে তাদেরকে জবাবদিহি করতে হবে।
মিডিয়ার জবাবদিহি নিয়ে তিনি বলেন, সেই জবাবদিহি করতে হবে কোথায়? জনগণের কাছে। বলা বাহুল্য এই কারণে কিন্তু বিশ্বের প্রায় সব সরকার সংবাদপত্রকে ভয় পায়। মিডিয়া সরকারের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। মিডিয়ার হাতে বন্দুক নাই।
‘২৮ অক্টোবর দেখেছেন রাইফেল নাই, বুলেট নাই, টিয়ারগ্যাস নাই, সাউন্ড গ্রেনেড নাই, কিন্তু তাদের হাতে যে জিনিসটা আছে, তা হচ্ছে কলম। এই কারণে আজকের আধুনিক বিশ্বে… দি মিডিয়া ক্যান ডু অ্যান্ড আনডু আ গভার্নমেন্ট। বন্দুকের দরকার হয় না এবং সেই কারণে পৃথিবীর প্রায় সব সরকার মিডিয়াকে ভয় পায়।’
বিএনপির অন্যতম এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, আজকের যে পরিবেশ পরিস্থিতি সেখানে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে গেছে। কোনো আধুনিক সমাজ এভাবে বসবাস করতে পারে। ১৭৭১ সাল থেকে আড়াইশ বছর পরের আজকের সরকার কি মানব সভ্যতার পেছনের দিকে হাঁটছে?
তিনি বলেন, যেখানে ১৭৭১ সালে সংবাদপত্রে জবাবদিহি নিশ্চিত করার ভূমিকা ব্রিটিশ সরকার নিশ্চিত করেছিল। সেখানে আজকে সংবাদপত্রের টুঁটি চেপে ধরে আছে। তাদের এ সরকার বলছে, তোমরা কথা বলতে পারবে না।
বিএফইউজের নির্বাচনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা সারা দেশে একটি তামাশার নির্বাচন বর্জন করেছি, কিন্তু নির্বাচন বর্জন করিনি। আমরা জানি আজকের পরিবেশ পরিস্থিতি অত্যন্ত দুরূহ। তারপরও আমরা জানি বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন আজকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে পেরেছে। এজন্য তারা প্রশংসা পাবে। আজকে আমরা সরকারের চোখে এটা আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চাই। এ চরম পরিস্থিতির মধ্যে সুস্থ নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমি সরকারকে অনুরোধ করব আপনারা যেভাবে বানরের পিঠা বেচার নির্বাচনের আয়োজন করেছেন, নির্বাচনের আগেই সব সিটের ফলাফল ইতোমধ্যে নির্ধারণ করে ফেলেছেন। এখনো সময় আছে এ অপবাদ থেকে বেরিয়ে আসুন। আপনারা নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন এতে করে সুনাম আওয়ামী লীগেরই হবে।
উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এম আব্দুল্লাহ।
মহাসচিব নুরুল আমিন রোকনের সঞ্চালনায় দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী, এমএ আজিজ, এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, আবদুল হাই শিকদার, কামাল উদ্দিন সবুজ, বাকের হোসাইন, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, কাদের গণি চৌধুরী, শহীদুল ইসলাম বক্তব্য দেন।
বিকালে সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিলের কর্মঅধিবেশন এবং নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
Leave a Reply