সলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। নিহত উলফাত আরা তিন্নি (২৪) হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। বড় বোনের সাবেক স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে শুক্রবার মধ্যরাতে নিজ বাড়িতে সিলিং ফ্যানে ঝুলে আতœহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার।

জানা যায়, তিন্নির বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার শেখপাড়া গ্রামে। তিন্নি গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মৃত ইউসুফ আলীর কন্যা। তার বড়বোন মুন্নির একই গ্রামের পুনুরুদ্দীনের ছেলে জামিরুলের সঙ্গে বিয়ে হয়। বনিবনা না হওয়ায় মুন্নির সঙ্গে জামিরুলের বিচ্ছেদ ঘটে। মুন্নিকে সে আবার ঘরে নিতে চায়। কিন্তু মুন্নি রাজি না হলে দীর্ঘদিন ধরে জামিরুল পরিবারটির উপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছিল।

বাড়িটিতে কোন পুরুষ সদস্য না থাকায় জামিরুলের নির্যাতনে অসহায় হয়ে পড়ে মুন্নির পরিবার।

বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে জামিরুল শেখপাড়ায় তিন্নিদের বাড়িতে লোকজন নিয়ে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। দুই ঘন্টা পর আবারো জামিরুল ওই বাড়িতে যায় এবং জোর করে তিন্নীর শোয়ার ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় তিন্নীর কান্না শুনতে পেয়ে বাড়ির নিচতলা থেকে দোতলায় ওঠার চেষ্টার করেন মুন্নী। কিন্তু জামিরুলের সহযোগীদের বাধায় যেতে পরেনি। এর কিছুক্ষণ পর জামিরুল চলে গেলে রাত ১২টার দিকে তিন্নিকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় টের পায় মুন্নি।

মুন্নি অভিযোগ করেন, বাড়ির দোতালায় তিন্নির সঙ্গে জামিরুল এমন কি করেছে যে, মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে তরতাজা বোনের লাশ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখলাম। আমার বোনের সঙ্গে খারাপ কিছু করায় সে আত্মহত্যা করেছে।

তিন্নির মা হালিমা বেগম জানান, আমার মেয়ে খুবই মেধাবী। বিসিএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ঘটনার দিন সে সন্ধ্যার দিকে কুষ্টিয়া থেকে এক বান্ধবির বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে জামিরুলের হুমকির শিকার হয় তিন্নি। আমাদের সন্দেহ তিন্নিকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে।

এদিকে মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করেছে নিহতের সহপাঠী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় তিন্নির এমন রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

শৈলকুপা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম বলেন, তিন্নির মৃত্যুটি রহস্যজনক। তার সঙ্গে এমন কিছু করা হয়েছে যে তিনি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেছি। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here