
বাংলাদেশের গণমাধ্যম এক ভয়ংকর সময় পার করছে। মুক্ত সাংবাদিকতা দূরে থাক সাংবাদিকদের প্রাণ রক্ষাই এখন দায় হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সাংবাদিক নেতারা।
তারা বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই গণমাধ্যমের উপর খড়গ নেমে এসেছে। ১৯৭৫ সালে ৪টি পত্রিকা রেখে সব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এবারও ক্ষমতায় এসে অসংখ্য পত্রিকা ও টেলিভিশন বন্ধ করে দিয়েছে। ৫৪ জন সাংবাদিক হত্যা করেছে।
সোমবার (০৩ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজের উদ্যোগে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্র, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও বাক-স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। অসংখ্য মিডিয়া বন্ধ করে দিয়েছে। একের পর এক সাংবাদিকরা নির্যাতিত হচ্ছে। মামলা-হামলার শিকার হচ্ছে। গত ৩ মাসে ৬০ জন সাংবাদিক নিগৃহীত হয়েছে।
তিনি বলেন, এই স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায় ছাড়া গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব না। এজন্য এই সরকারের পতন আন্দোলনে সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন বলেন, এই সরকার যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই মিডিয়া বন্ধ করে বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেয়। এখনও তার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। এরই অংশ হিসেবে প্রথম আলোর রিপোর্টার শামসুজ্জামান ও সংগ্রামের ফটো সাংবাদিক আজীজ ফারুকীকে আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছে। দিনকাল বন্ধ করেছে। দিনকালসহ সব মিডিয়া খুলে না দিলে সরকারের পরিণাম ভালো হবে না। তাই অবিলম্বে দিনকালসহ সকল বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিন। কারান্তরীণ সাংবাদিকদের মুক্তি দিন, তা না হলে এই আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে।
ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে গণমাধ্যমকর্মীদের শঙ্কা ও ভয়ের মধ্যে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। তাই তারা এখন সত্য তুলে ধরতে পারছেন না। তাদেরকে এখন সেলফ সেন্সরশিপ করতে হচ্ছে। পাশাপাশি সরকারের সমালোচনা করলে রোষানলের শিকার হয়ে বন্ধ করা হচ্ছে বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন।
ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগের কাজই সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করা। স্বাধীনতার পর তারা ৪টি পত্রিকা রেখে সকল পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিল। এবারও তারা দিনকালসহ অসংখ্য মিডিয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তারা গণমাধ্যমের উপরে নিষ্ঠুর নির্যাতন চালাচ্ছে। এবার প্রথম আলোর রিপোর্টার শামসুজ্জামান ও সংগ্রামের ফটো সাংবাদিক আজীজ ফারুকীকে কারান্তরীণ করে মুক্তি দিচ্ছে না। এভাবে চলতে পারে না। যে যেখানে আছে সবাই একত্রে এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে সরকারের পতন নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই এদেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরে আসবে।
বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে ও ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম দিদারের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন— বিএফইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক খুরশীদ আলম, ডিইউজের সহসভাপতি শাহীন হাসনাত।
আরও উপস্থিত ছিলেন— বিএফইউজের সহকারী মহাসচিব নাসির আল মামুন, কোষাধ্যক্ষ মুহাম্মদ খায়রুল বাশার, ডিইউজের কোষাধ্যক্ষ গাযী আনোয়ার, প্রচার সম্পাদক খন্দকার আলমগীর হোসাইন প্রমুখ।