
সাতক্ষীরা চিত্র:সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় দুই সন্তানসহ স্বামী-স্ত্রীকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যার ঘটনায় নিহত শাহিনুরের ভাই রাহানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে। বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) রাতে কলারোয়া থানায় মামলা হয়। নিহত শাহিনুর রহমানের শাশুড়ি ময়না খাতুন কারও নাম উল্লেখ না করে মামলা করেন।
কলারোয়া থানার পুলিশ গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) ভোরে কলারোয়া উপজেলায় দুই সন্তানসহ স্বামী-স্ত্রীকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহত ব্যক্তিরা হলেন শাহিনুর রহমান, তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন, ছেলে সিয়াম হোসেন ও মেয়ে তাসলিমা। নিহতদের বাড়ি কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিশাগ্রামে। জানা গেছে শাহিনুর পেশায় মৎস্য ব্যবসায়ী ছিলেন।
ঘটনার রাতে নিহত শাহিনুর রহমানের ছোট ভাই রায়হানুল ইসলাম বাড়ির অন্য ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। তাকে থানায় হেফাজতে নেয়া হয়। তিনি জানান, এই পরিবারের সঙ্গে জায়গা-জমি নিয়ে পাশের কয়েক প্রতিবেশীর বিরোধ ছিল। রায়হানুল ইসলাম আরও জানান, বাড়িতে তার মা ও বড় ভাইয়ের পরিবারের চারজনসহ তারা সাত সদস্য। তাদের মা বুধবার এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন।
তিনি ছিলেন পাশের ঘরে। ভোরে পাশের ঘর থেকে তিনি গোঙানির শব্দ শুনতে পান। গিয়ে দেখেন, ঘরের বাইরে থেকে দরজা আটকানো। দরজা খুলে দেখতে পান বীভৎস দৃশ্য। তখনো একটা শিশু বেঁচে ছিল। সে কিছুক্ষণ পর মারা যায়।
সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলসি গ্রামে ঘরে ঢুকে স্বামী, স্ত্রী ও তাদের দুই শিশু সন্তানকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে।
নিহত শাহিনুর রহমানের শাশুড়ি ময়না খাতুন বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) রাতে বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। তবে মামলার এজাহারে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।
মামলাটি তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এদিকে, ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে চারজনের লাশ দাফন করা হয়।
কলারোয়া থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারান চন্দ্র পাল মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘মামলার বাদী হয়েছেন নিহত শাহিনুর রহমানের শাশুড়ি ময়না খাতুন। মামলা নম্বর ১৪। মামলাটি তদন্ত করবে সিআইডি।’
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
বৃহস্পতিবার ভোরে একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহতরা হলেন- খলসি গ্রামের শাহাজান আলীর ছেলে মাছের ঘের ব্যবসায়ী শাহিনুর রহমান (৪০), তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন (৩৫), ছেলে সিয়াম হোসেন মাহি (১০) ও মেয়ে তাসনিম (৮)।
শাহিনুরের ৬ মাস বয়সী শিশু সন্তান আফরিন মারিয়া বাদে বাকি চারজনকেই হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
শাহিনুরের ছোট ভাই রায়হানুল ইসলাম জানান, বাড়িতে তার মা ও বড় ভাইয়ের পরিবারসহ তারা সাতজন থাকতেন। তাদের মা বুধবার এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন। তিনি (রায়হানুল) ছিলেন পাশের ঘরে। ভোরে ভাইয়ের ঘর থেকে তিনি গোঙানির শব্দ শুনতে পান। পরে গিয়ে দেখেন ঘরের বাইরে থেকে দরজা আটকানো। দরজা খুলে দেখতে পান বীভৎস দৃশ্য।
কলারোয়া থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত ওসি হারান চন্দ্র পাল আরো বলেন, ‘এটি যে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড তাতে কোনো সন্দেহ নেই। হত্যার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ-সিআইডিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব ইউনিট কাজ করছে।’
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।
দুপুরের দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিবারে জীবিত থাকা শিশু মারিয়ার সার্বিক দায়িত্ব দেন সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল।
এ হত্যাকান্ডের ব্যাপারে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘পারিবারিক বিরোধ ও শত্রুতার জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার মোটিভ উদঘাটন ও হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।’